Skip to main content

ছায়া



 ছায়া (পর্ব – ১)
মোঃ নোমান সরকার

                                                 প্রথম দৃশ্য – ১
 (ভোর বেলা। নদীর তীরে হাঁটছে ২ জন মানুষ। দুইজনের বয়স ৫০ এর উপরে।  একজন সাদা পায়জামা, সাদা পাঞ্জাবী পরা, তিনি চেয়ারম্যান সাহেব। আরেকজন লুঙ্গি পরা আর ফতুয়া। তার হাতে ছাতা সেটি , ছাতাটি চেয়ারম্যান সাহেবের মাথার উপরে।)
 (ক্যামেরা শুরু করবে দুইজন মানুষ হেঁটে যাচ্ছে, তাদের পিছন দিক থেকে। নদীর পার বা তীর সহ আকাশ দেখা যাচ্ছে।
ক্যামেরায় প্রবেশ করবে দুইজন। চেয়ারম্যান সাহেবের মুখ নদীর দিকে। তারপর কালুকে দেখানো হবে, তার মুখ চেয়ারম্যান সাহেবের দিকে।)
 কালুঃ চেয়ারম্যান সাহেব, আপনার নাস্তা খাইবার সময় হইছে।
চেয়ারম্যান সাহেবঃ চল, বাড়ির দিকে।
কালুঃ চেয়ারম্যান সাহেব , আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই?
চেয়ারম্যান সাহেবঃ কর।
কালুঃ দুনিয়াটা এত ছোট যে জমি নিয়া খালি মারামারি হয়। আর মাথার উপর এত বড় একটা আকাশ? 
 (চেয়ারম্যান সাহেব দাঁড়াল, হাত দিয়া কালুকে থামাল। তার দৃষ্টি নদীর দিকে।) 
চেয়ারম্যান সাহেবঃ কালু, একটা মানুষ পড়ে আছে নদীর কিনারায়।
(কালু চেয়ারম্যান সাহেবের বামে আর নদী ডানে। তাই চট করে ঘাড় ঘুরিয়ে সে দেখার চেষ্টা করল।)
 কালুঃ হ!( চমকে উঠে) চেয়ারম্যান সাহেব, মানুষ। নাকি লাশ?লাশ!
চেয়ারম্যান সাহেবঃ কালু, আসগররে খবর দে। নৌকা ঘাটেই আছে,নৌকা নিয়া আসতে বল। লাশ হলে যে নদী দিয়া আসছে সেটা নদীতে ছাইড়া দিয়া আসবি।  আর জীবন থাকলে সদর হাসপাতালে। 
 
 (কালু ছাতা হাতে দৌড়ে গেল নদীর তীরের দিকে। সে কোমরে রাখা মোবাইল বের করতে করতে দৌড়াচ্ছে। কথা বলেছে।  চেয়ারম্যান সাহেব এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে কালুর দৌড়ে যাওয়া দেখে নদীর দিক থেকে সরে যেতে লাগল। মানে বাড়ির দিকে যাচ্ছে।)

                                                      দৃশ্য – ২ 
 (চেয়ারম্যান সাহেব আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। দাড়িতে চিরুনি বুলাচ্ছে। বিছানায় তার স্ত্রী  রেবেকা বসে আছে। চমৎকার একটা শাড়ি পড়া। বয়স ৪০। নাকে নোলক, হাতে অনেক গুলো কাঁচের চুড়ি।পান সাজাচ্ছে।)

 রেবেকাঃআপনি কি কোথাও বের হবেন?
চেয়ারম্যান সাহেবঃ না। 
রেবেকাঃ পান দিব কি আপনাকে?
চেয়ারম্যান সাহেবঃ না। 
রেবেকাঃ আপনার কি মন খারাপ?
চেয়ারম্যান সাহেবঃ না। 
রেবেকাঃ আপনি কি আমার কাছে একটু বসবেন?  
চেয়ারম্যান সাহেব আয়নায় রেবেকার দিকে তাকাল।

 এমন সময় ঘরের বাইরে একটু দূর থেকে কেউ একজন বললঃ কালু এসেছে।
(চেয়ারম্যান সাহেব আয়ানায় নিজেকে দেখতেই লাগল) 

                                                     দৃশ্য – ৩ 
  (কালু দাঁড়িয়ে আছে ঘরের বাইরে যে বারিন্দা আছে তার বাইরে। চেয়ারম্যান সাহেব এসে বসল তার উঁচু হাতলওয়ালা চেয়ারে।
চেয়ারম্যান সাহেব তাকাল কালুর দিকে।)
 কালুঃ এখন সদর হাসপাতালে আছে, আসগর তারে রাইখা আইছে। পিছনের দিকে দুই হাত বাঁধা ছিল। চোখ দুইটাও। নৌকায় নিশ্চয়ই চেনা কেউ ছিল তার। (একটূ চুপ থেকে) কিন্তু জোয়ারে নদীর কিনারায় আসলেও বাইচা আছে কেমনে বুঝলাম না। 
 চেয়ারম্যান সাহেবঃ বয়স?
 কালুঃবয়স ২৬/২৭ হইতে পারে। পড়নে শহরের মানুষের পোশাক। মানিব্যাগ ছিল না। কিন্তু হাতে দামী ঘড়ি ছিল। কারন পানিতে নষ্ট হয় নাই। দেখতে খারাপ দেইখা হয়ত নেয় নাই। আমি নিজেও আগে পানিতে নষ্ট হয় না ঘড়ি দেখি নাই।
চেয়ারম্যান সাহেবঃ কালু তুই এখন যা।
 (কালু আর কথা বলতে গিয়েও থামল)
 কালুঃ জি, চেয়ারম্যান সাহেব।
 (কালু চলে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান সাহেব চোখ বন্ধ করল। তার দুই হাত মাথার উপরে উঠিয়ে পিছনে নিয়ে গেল। তারপর চোখ বন্ধ অবস্থায় মাথাটা উঁচু করল। তাকে কোন রকম চিন্তিত মনে হল না।) 

                                                  দৃশ্য -৪
  আসগর দাঁড়িয়ে আছে ডাক্তারের সামনে।  






Comments

Popular posts from this blog

Gean aar hashi
আমি মোঃ নোমান সরকার। শিশুদের জন্য গল্প লিখতে ভালোবাসি। শিশুদের নিয়ে অনেক কাজ করার ইচ্ছে। আমাদের দেশের শিশুরা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। খেলার মাঠ নেই, স্বাধীন ভাবে খেলতে যেতেও পারে না। যেন আটকে গেছে পাখি কোন অদৃশ্য খাঁচায়। আমি শিশুদের নিয়ে গল্প লিখে তাদের মনের অনেক জানালা খুলে দিতে চাই। সব কিছু মিলিয়ে শিশুদের প্রতি আমার অনেক কিছু করার ইচ্ছে আছে।  নোমান সরকার